
হিরাপুর পৌঁছাতেই সামনে দেখি টোটো স্ট্যান্ড, আগে পিছু না ভেবে বলে বসলাম নলপুর স্টেশন যাবেন? বলল ''বসে পরো'', টোটো চেপে গ্রামের শুরু রাস্তা দিয়া একে বেঁকে চললাম স্টেশন এর উদ্দেশে, টোটো থেকে নেমে ছুটে দিলাম নলপুর টিকেট কাউন্টার এ ট্রেন এর টিকেট আর জন্যে ।
অবশেষে মেদিনীপুর লোকাল ট্রেন এল, আর আমি এক দৌড়ে ট্রেন চড়ে বসলাম, এতক্ষনে আমার নিজের মধ্যে একটা কনফিডেন্স কাজ করছে যে, আমি অবশেষে ক্ষীরাই যাচ্ছি, কারণ এটাই আমার লাস্ট স্থল যান ।
আর মাঝে আর একটা কথা বলে রাখি, যারা হাওড়া থেকে আসবেন তারা যে কোনো মেদিনীপুরে লোকাল ট্রেন চেপে আস্তে পারেন খুব সহজেই। অবশেষে ১.৩০ মিনিটে আমি পৌছালাম ক্ষীরাইস্টেশন এ, আর পৌঁছাতেই স্টেশন এর মধ্যে থাকা মেয়েদের দেখে মনটা খুব ভালো হয়ে গেল, কারণটা তাদের মাথায় থাকা রংবেরং এর ফুলের হেয়ারবেন দেখে ।
তখনি বুজেগিয়েছিলাম যে আমার জন্য কি অপেক্ষা করছে ???? যাই হোক স্টেশন এর বা দিক ঢাল বরাবর একটা রাস্তা ওই ফুলের স্বর্গের রাস্তায় চলে গিয়াছে, একটু যেতেই দেখি ৭ থেকে ৮ টা গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে (Maruti OMNI )| গাড়ি গুলি স্টেশন থেকে ওই ফুলের বাগান পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া আসা করছে, ভাড়া টা ঠিকবলতে পারবোনা কারণ আমি পায়ে হেটে ওই ফুলের বাগানে পৌঁছে ছিলাম দুরুত্ব টা প্রায় ২ কিলোমিটার|
আমি সকাল ৮ টা তে বাড়িয়েছি বাড়ি থেকে শুধু চা বিস্কুট খেয়ে বাড়িয়েছিলাম , আর এখন প্রায় ২ টো বাজে ইঁদুর পেতে দৌড় দিচ্ছে তাই সাত পাঁচ না ভেবে ভাতের হোটেলে গিয়া বসে পড়লাম আর সাথে সাথে ডিম্ ভাতা অর্ডার দিলাম, খাওয়া দাওয়া শেষ করে রওনা দিলাম ফুল বাগানে দর্শনের উদ্দেশে শুরু হলো গাঁধাফুল দিয়া তার পর এক ফুলের খেত, মল্লিকা গোলাপ, রজনীগন্ধা, ভেলভেটে ফুল আরো অনেক কিছু শুধু ফুল না আর সাথে ও চাষ হচ্ছিলো ফুলকপি বাঁধাকপি , ওলকপি, আরো অনেক কিছু। অনেকে দেশি কপি বাড়ির জন্য নিয়ে যাচ্ছিলো, আমি এত ফুলের গাছ বা ফুলের খেত আগে এত দেখিনি, তাই রীতিমতো প্রথম দেখায় অবাক হয়ে গিয়ে ছিলাম।
যাই হোক অবশেষে পুরো ফুলের বাগান ঘুড়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিলাম। ফেরার পথে ফের ২ কিমি হেটে ক্ষীরাই স্টেশনে পৌঁছে দেখি স্টেশনটা পুরো জন মানুষে ভরপুর। সবাই বাড়ি যাবে তাই স্টেশনে অপেক্ষা করছে, যাইহোক ৩০ মিনিট অপেক্ষার পর হাওরা লোকাল ট্রেন স্টেশনে এলো।
আমি ট্রেনে চেপে বসলাম, হটাৎ মনে পড়লো পরের স্টেশন পাঁশকুড়া, যেটা চপ এর জন্য বিখ্যাত, আর কি নেমেপলাম পাঁশকুড়া স্টেশনে। স্টেশন থেকে বেরোতেই উল্টোদিকে দেখি বাজার, বেশ কিছুটা যেতে দেখি কোনো চপের দোকান নেই, আসে পাশের দোকানে জিজ্ঞাসা করে জানতে পারলাম সামনে পাঁশকুড়া বাস স্ট্যান্ড আছে ওই খানে নাকি চপ পাওয়ায়, প্রায় ১০ মিনিট হাঁটার পর বাস স্ট্যান্ড খুঁজে পেলাম আর পাশে দেখি চপের দোকান, ২ টো আলুর চপ ২টো আলুর বোমা, ২টো পেঁয়াজি নিয়ে খেতে শুরু করলাম, বেশ ভালো আমার বাড়ির পাশের চপের থেকে বেশ আলাদা, তাই বাড়ির জন্য ও নিয়ে নিলাম।
তারপর আবার ট্রেন চেপে নলপুরের উদ্দেশে রওনা দিলাম, স্টেশনে নেমে হীরাপুরের টোটো ধরে জেটি ঘাটে পৌছালাম। তখন বাজে প্রায় সন্ধ্যা ৬.৩০, নৌকো করে নদী পেরিয়ে বাটানগর জেটিতে পৌছালাম,আবার হাত দিলাম বাটানগর মোড়ের উদ্দেশে কারণ এই বাটানাগার জেটি থেকে বাটানাগার মোর পর্যন্ত যেতে তেমন কোনো অটো বাস পাইনি, আর বেশ রাত হয়েছে তখন বাজে ৭.৩০ তাই ঠিক করলাম অটো ধরে ডাকঘর তারপর ডাকঘর থেকে অটো ধরে চৌরাস্তা আর চৌরাস্তা থেকে বাস ধরে বাড়ি ফিরে এলাম।
একদিনের এই ছোট্টো একটা ভ্রমণ বেশ ভালো লাগলো , তোমরাও যদি কেউ একদিনের জন্য কাছে পীঠে ঘুরতে যেতে যাও তবে তোমাদের জন্য এটা হতে পারে অন্যতম একটা ভ্রমণের ঠিকানা।
0 মন্তব্যসমূহ